রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:১০ পূর্বাহ্ন
সম্পাদনায় এম আই ফারুক, কালের খবর :
আমাদের সকলের মধ্যে আছে রেকর্ড গড়ার প্রবনতা। সবাই চাই এমন কিছু করতে যার কৃতিত্ব সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ুক। সে ছোট অক্ষরে লিখা হোক কিংবা বড় কিছু বানিয়ে।
পৃথিবীতে বিভিন্ন বড় বড় বিল্ডিং, ব্রিজ ও সৌধ রয়েছে এই রেকর্ডের তালিকায়। আর সেখানে ভারতের এক ব্যক্তি অভিনব রেকর্ড গড়ে তুলেছেন। না কোন বড় বাড়ি কিংবা গাড়ি বানিয়ে নয়, সব থেকে বড় পরিবার বানিয়ে। নাম জিওনা চানা, ভারতের উত্তর পুর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ মিজোরামের বাসিন্দা। পেষায় তিনি চাষবাস ও পশুপালন করেন।
এই যুগে দাঁড়িয়ে আমাদের ভারতবর্ষে দুটির থেকে বেশি বিবাহ কিংবা কেউ দুটির অধিক বাচ্চা যাতে না নেয়, অর্থাৎ জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রনে জোর দেওয়া হচ্ছে। কারন বিশ্বের জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে বিপুল হারে। আর সেখানে দাঁড়িয়ে এই জিওনা একাধিক বিয়ে ও সন্তানের পিতা হয়ে নিজের নামে করে নিয়েছেন বিশ্বের সবচেয়ে বড় পরিবারের মালিক হওয়ার গৌরব।
১৯৪৫ সালের ২১ই জুলাই বাংলাদেশ লাগোয়া ভারতের উত্তর পূর্ব অঞ্চল মিজোরামের এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন জিওনা। মাত্র ১৭ বছর বয়সে তিনি প্রথম বিবাহ করেন। কিন্তু তিনি এই একটি বিবাহ করে সন্তুষ্ট থাকতে চাননি। জিওনা এর পরে একের পর এক বিয়ে করতে থাকেন।
এখন তার স্ত্রীর সংখ্যা ৩৯ জন যা বিশ্বের ইতিহাসে আর কারুর আছে বলে মনে হয় না। তিনি এক বছরে সর্বাধিক দশটি বিয়ে করার রেকর্ডও গড়েছেন। সব স্ত্রী তার সাথেই থাকে।
জিওনা নিজের ভিটেতে বানিয়েছেন ১০০ কামরার একটি বাড়ি। প্রতিটি স্ত্রী তার ঘরের কাছেই থাকে। তবে বিবাহের দিন অনুযায়ী তারা দূরে থাকে অর্থাৎ প্রথম স্ত্রী থাকে সবচেয়ে দূরে আর শেষ বিবাহ করা স্ত্রী জিওনার ঘরের একদম পাশে। তবে সবারই জিওনার ঘরে ঢোকার অনুমতি আছে।
জিওনার শুধু ৩৯ জন স্ত্রীই নয়, রয়েছে ৯৪ জন সন্তান ও ৩৩ জন নাতি নাতনি। সকলেই জিওনার বাড়িতে একসাথে থাকে। তবে জিওনা এখানে থামতে চাননি, জানিয়েছেন তার এই পরিবারকে আরও বড় করতে চান। তাই তিনি সব সময়ই চান একজন স্ত্রী সব সময় তার পাশে থাকুক, তার সেবা যত্ন করুক।
জিওনার পরিবারে স্ত্রীদের ও ছেলেদের আলাদা ঘর থাকলেও রান্নাঘর কিন্তু একটাই। অর্থাৎ এই জিওনা সহ ৩৯ জন স্ত্রী, ৯৪ জন ছেলে মেয়ে ও ৩৩ জন নাতি নাতনির খাবার একসাথেই হয়।Ó
তার জন্য জিওনার পরিবারে প্রতিদিন ১০০ কেজি চাল আর ৬০ কেজির বেশি আলু লাগে। আর যেদিন মাংস হয় সেদিন ৪০ টিরও বেশি মুরগি লাগে। জিওনার ছেলেরা সবাই চাষবাসের কাজ ও পশুপালন করায় তাদের খাদ্যের অভাব হয় না।
জিওনা তার পরিবারের সদস্যদের জন্য করে দিয়েছেন আলাদা স্কুল। যেখানে তার ছেলে মেয়ে এবং নাতি নাতিনিরা পড়াশুনা করে। বর্তমানে সেই স্কুলটির জন্য সরকারি কিছু অনুদানও পাওয়া যায়।
জিওনার বাড়িতে বেডরুমের পাশাপাশি রয়েছে একটি বিশাল বসার ঘর, যেখানে তার পরিবার যারা দেখতে আসেন তাদের বসতে দেওয়া হয়। জিওনা একটি সাক্ষাতকারে জানিয়েছেন যে “আমি বিশ্বের সবচেয়ে বড় পরিবারের কর্তা হতে পেরে গর্বিত। আমি এই পরিবারকে আরও বাড়াতে চাই। আমার দেখাশোনা করার জন্য এখন অনেকেই রয়েছে। এটাই পরম শান্তির।”
বর্তমানে এই ৭৩ বছর বয়সী জিয়ান নিজের পরিবার নিয়ে সুখী আছেন।